ডিজিটাল যুগে জীবন এখন স্মার্ট। আর্থিক লেনদেন থেকে গবেষণা। এটিএম, ডেবিট, ক্রেডিট, কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাঙ্কি়ং থেকে কম্পিউটার নির্ভরতা। বড় বেশি ব্যস্ততা। আর তাতেই প্রযুক্তি নির্ভর অপরাধ আর অপরাধীদের রমরমা। সাইবার দুনিয়ায় এখন হ্যাকিং এখন হিব্রু নয়।
আধুনিক জীবনে কেরিয়ার থেকে সুখী গৃহকোণ সর্বত্র সারাক্ষণ সাপলুডোর অনিশ্চয়তা। দেঁতো হাসি আর স্মার্ট জীবনের বিজ্ঞাপনের মাঝে একান্ত সময়টুকু মেলে বেডরুমে। মাঝরাত বা তার আরও একটু বেশি। পানপাত্রে খেলে যাচ্ছে জলতরঙ্গ। বিছানায় একটু বেশিই আলুথালু, ঘনিষ্ঠও দুজনে। সামনে টিভি চলছে। স্মার্ট টিভিতে চলছে বে ওয়াচ বা বিচ ভলিবল। নাহ ! চ্যানেল সার্ফ করবেন বলে রিমোট খোঁজাখুঁজি। খুঁজে পেলেন। স্মার্ট টিভির রিমোট তো। হাতে নিয়ে বাটন টেপাটিপির ঝক্কি নেই। মুখে পছন্দের চ্যানেল বললেই তা পাল্টে যাবে। এমনটাই ঘটল। আপনার মুখে বিজয়ীর হাসি। গভীর আশ্লেষে আরও গাঢ় হলেন দুজনে। টিভি চলতে থাকল টিভির মতো। কিন্তু ঘরে ডেকে আনলেন স্মার্ট বিপদ। ব্ল্যাকমেলিং।
সম্প্রতি গুজরাটের সুরাতের এক সম্পন্ন পরিবারের গৃহবধূ ঠিক এমনই এক সমস্যার শিকার হয়ে শেষমেষ সাইবার বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হন। তাঁর বেডরুমে স্মার্ট টিভি চলছিল। রাতে তিনিও ছিলেন স্বামীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ। হঠাৎ একদিন একটি ই মেইল পান। তাতে একটি ফোন সাইটের কথা বলা হয়। ওই সাইটে একটি লিঙ্ক দেওয়া ছিল। মেইলের নির্দেশ মতো তিনি ওই লিঙ্কে ক্লিক করেন এবং বিষয়টি তখনকার মতো শেষ হয়ে যায়। দিনকয়েক পরে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির থেকে তিনি একটি ফোন পান। তাঁর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের বর্ণনা করে তাঁর থেকে ৫ বিটকয়েন বা ৪০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। দাবি মতো অর্থ না দিলে ওই মহিলার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
ওই মহিলা বুঝতে পারেন হ্যাকিং জাতীয় একটা গোলমাল হয়েছে কিন্তু ঠিক কী হয়েছে বুঝতে না পেরে এক সাইবার বিশেষজ্ঞের কাছে যান। ওই বিশেষজ্ঞ তাঁকে জানান স্মার্ট টিভি হ্যাক করেছে হ্যাকাররা। এরপর ব্ল্যাকমেলিং করছে হ্যাকাররা।
কীভাবে এই স্মার্ট টিভি হ্যাকিং সম্ভব। ২০১৩ সালে আমেরিকায় ব্ল্যাকহেড কনফারেন্সে স্মার্ট টিভি হ্যাকিংয়ের একটি নকল মহড়া দেওয়া হয়। স্মার্ট ফোনের মতোই একই ধরনের সফটওয়্যার প্রযুক্তিতে চলে স্মার্ট টিভি। স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মতো স্মার্ট টিভিতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে। থাকে ক্যামেরা। এমনকী রিমোটে থাকে মাইক্রোফোন। বিপদের শুরু এখান থেকেই। কিন্তু ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই। এই বিপদ এড়ানো সম্ভব।
মন্তব্য - আলোচনায় যোগ দিন 0 মন্তব্য | প্রবেশ করুন