আবার পথে মমতা। অতিমারির কারণে দীর্ঘদিন তিনি কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি করেন নি। শনিবার তিনি পথে নামলেন। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে দলিত মেয়ের ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এদিন তিনি পথে নামেন। তাঁর এই পদযাত্রায় দলের সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে বহু কর্মী-সমর্থক যোগ দেন। হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি । এদিন তিনি সেই ঘটনারও প্রতিবাদ জানান।
এদিন বিকেল চারটে নাগাদ বিড়লা প্ল্যানোটেরিয়ামের সামনে থেকে শুরু হয় মমতার পদযাত্রা। শেষ হয় গান্ধিমূর্তির পাদদেশে। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখেন।এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে হাথরসের ঘটনা থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকারের সমস্ত জনবিরোধী নীতির সমালোচনা করেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া এবং দেশে দলিত সমাজের ওপর অত্যাচারের ঘটনা।
মমতা বন্দ্যোয়াপাধ্যায়ের এদিনের বক্তব্যে এই প্রতিবাদকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তিনি দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় এই ঘটনার প্রতিবাদে পোস্টারিং করার আহ্বান জানান।তিনি বলেন প্রতি ব্লকে এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রচার করা হোক। দলের পোড় খাওয়া রাজনীতিকরা বলেন এই কর্মসূচির মাধ্যমে আসলে তিনি আগামি বিধানসভা নির্বাচনের আগে সমস্ত দেওয়ালের দখল নিয়ে রাখতে কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দিলেন।
মমতা এদিন হাথরসের ঘটনাকে সামনে রেখে আগামি বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রচারে কী কী ইস্যু তুলে ধরা হবে তাও বলে দিলেন। মমতা এদিন বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া থেকে বি এস এন এলের মতো সংস্থা বিক্রি করা হচ্ছে। তাঁর সমালোচনার তালিকায় ছিল দেশে, বিশেষ করে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের ওপর বেড়ে চলা হিংসা ও ধর্ষণের ঘটনা। বিজেপিকে কোভিডের চেয়েও বড় অতিমারি বলে উল্লেখ করেন মমতা। তিনি বলেন দেশে লকডাউনের সময় কত পরিযায়ী শ্রমিক মারা গেলেন , কতজনই বা কাজ হারালেন তার কোনও তথ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নেই। তিনি বলেন, আসলে মোদি সরকারের কাছে এই পরিযয়ীশ্রমিক বা গরিব মানুষের জীবনের কোনো দাম নেই। তিনি তাঁদের প্রানের বিনিময়ে বিত্তবানদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন।
এদিন তাঁর বক্তব্যে দিল্লি দাঙ্গার প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি অভিযোগ করেন, এই দাঙ্গায় প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে, মোদি বিরোধীদের নিশানা করা হচ্ছে। দেশে সমস্ত বিরোধী স্বর রোধ করার চেষ্টা চলছে। মোদি সরকারের হাত থেকে ছাড় পাছে না সংবাদ মাধ্যমও।
দেশে করোনা পরিস্থিতির জন্য তিনি মোদি সরকারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন করোনা সংক্রমণ আটকানো যাছে না। কেন্দ্র সরকারের ভুল নীতির জন্যই দেশে করোনা এত ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
আগামি দিনে এই সমস্ত ইস্যুকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেন তিনি।
মন্তব্য - আলোচনায় যোগ দিন 0 মন্তব্য | প্রবেশ করুন